ডেটা সেন্টার শব্দটা আমরা প্রায়ই শুনে থাকি। শব্দটা শুনে মনে যে দৃশ্যটা ভেসে ওঠে তা হচ্ছে, একটি বিশাল ঘরে অনেকগুলো বড় বড় কম্পিউটার বা সার্ভার। দৃশ্যটা সত্য, তবে পুরোপুরি নয়।
ডেটা সেন্টারে যে শুধু সার্ভার থাকে তা নয়, বরং আনুসঙ্গিক আরো অনেক কিছু থাকতে হয়। যেমন:
১. সার্ভার যে রাখবেন, তার জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন। ডেটা সেন্টারে অবশ্যই নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে। সে জন্য জেনারেটরের ব্যবস্থাসহ পর্যাপ্ত ক্ষমতার ইউপিএস ও ব্যাটারি ব্যাংক রাখতে হবে। তাছাড়া কোন ইউপিএস কাজ না করলে যেন সার্ভারের কাজের ব্যাঘাত না ঘটিয়েই অন্য ইউপিএস থেকে বিদ্যুত পাওয়া যায়, তার ব্যবস্থাও রাখা হয়।
২. ডেটা সেন্টারের তাপমাত্রা এবং আদ্রতা নিয়ন্ত্রিত রাখার জন্য বিশেষ ধরণের এসির ব্যবস্থা করতে হয়।
৩. সার্ভারগুলোর সাথে যোগাযোগের জন্য সেখানে থাকে নানা ধরণের নেটওয়ার্কিং যন্ত্রপাতি। শুধু যোগাযোগ করলেই হবে না, কেউ যেন আপনার ডেটার সর্বনাশ না করতে পারে সে জন্য নানা প্রকারের প্রতিরক্ষাও প্রয়োজন। তার জন্যও প্রয়োজন ফায়ারওয়াল নামের আলাদা যন্ত্রপাতির। তাছাড়া নেটওয়ার্ক মনিটরিং এর জন্যও পৃথক ব্যবস্থা থাকে।
৪. বিদ্যুতের তার, নেটওয়ার্কের তার ইত্যাদির আধিক্য ডেটা সেন্টারে থাকাটাই স্বাভাবিক। সেগুলোকে নানা উপায়ে গুছিয়ে রাখা হয়। ডেটা সেন্টারে সাধারণত: ফলস ফ্লোরের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে, যার ভিতরে এসব তার লুকানো থাকে।
৫. ভূমিকম্প বা অগ্নিকান্ডে যাতে ডেটা সেন্টারের কোন ক্ষতি না হয়, সেভাবে ডেটা সেন্টারের বিল্ডিং তৈরী করা হয়। সংশ্লিষ্ট কক্ষগুলোতেও নেয়া হয় বিশেষ ব্যবস্থা। যেমন আগুন ধরলেই যাতে স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপন গ্যাস নির্গত হয় তার ব্যবস্থা রাখা হয়।
৬. ডেটা সেন্টারের সাথে বহির্বিশ্বের যোগাযোগের জন্য প্রয়োজন উচ্চ ব্যান্ডউইথ এর ডেটা সংযোগ, অনেক ক্ষেত্রেই এটি ইন্টারনেট সংযোগ। পর্যাপ্ত ব্যান্ডউইথের ইন্টারনেট সংযোগ না থাকলে ডেটা সেন্টারের উদ্দেশ্যই ব্যহত হতে পারে। এক্ষেত্রে ব্যাক-আপের ব্যবস্থাও থাকতে হবে, যেন একটি সংযোগে সমস্যা হলে অন্য সংযোগটি কার্যকর থাকে।
৭. ডেটা সেন্টারের নিরাপত্তার বিষয়টিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। সংশ্লিষ্ট ভবন বা কক্ষে যেন অননুমোদিত কেউ প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা থাকে, ক্লোসড সার্কিট ক্যামেরা থাকে।
৮. ডেটা সেন্টারের কেন্দ্রীয় চরিত্র হচ্ছে সার্ভার। ধীরে ধীরে সার্ভারের আকারও ছোট হয়ে আসছে। এখন সাধারণত: দুই ধরনের সার্ভার পাওয়া যায় - র্যাক মাউন্টেড এবং ব্লেড সার্ভার। র্যাক মাউন্টেড সার্ভারগুলো স্টীলের র্যাক বা তাকে সাজিয়ে রাখা যায়। ব্লেড সার্ভারে জায়গা- যেমন অনেক কম লাগে তেমনি বিদ্যুতের চাহিদাও থাকে কম।
আমি এটি পড়েছিলাম একটি ম্যাগাজিন থেকে।☺
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন